কারোর ফ্যাটি লিভার হলে আতংকিত না হয়ে বরং সচেতন হতে হবে। কারন, ফ্যাটি লিভারের কোন কোন রোগীর লিভারে দীর্ঘ মেয়াদী প্রদাহ বা ক্রনিক হেপাটাইটিস থাকে যাকে ‘ন্যাশ’ বলা হয়। ন্যাশ থাকলে শুধু যে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে শুধু তাই নয়, বরং হার্ট, ব্রেন, কিডনি ও ক্যান্সারসহ নানা ধরণের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেক বেশি থাকে। অন্যদিকে ফ্যাটি লিভারের যেসব রোগীরা সচেতন থাকেন, তারা অন্য রোগীদের তুলনায় ভালো থাকেন।
পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুললে ফ্যাটি লিভার নিরাময় সম্ভব।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট শাখা পরিচালিত সিলেট রেড ক্রিসেন্ট মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সোসাইটির কর্মকর্তাদের জন্য লিভার রোগ বিষয়ক একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট শাখার চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সিলেট জেলার সাধারন সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন আহমেদের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের ডিভিশন প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান জামিল।
অধ্যাপক স্বপ্নীল তার বক্তব্যে ফ্যাটি লিভার নতুন নতুন ওষুধগুলোর বিষয়ে ধারণা প্রদান করেন। তিনি জানান, ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস বি ও সিসহ নানাবিধ রোগের কারনে যে সমস্ত রোগী লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের জন্য এখন বাংলাদেশেই স্টেমসেল থেরাপি, প্লাজমা এক্সচেঞ্জ, লিভার ডায়ালাইসিস, রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি এবলেশন, ট্রানআর্টারিয়াল কেমোএম্বোলাইজেশনসহ অত্যাধুনিক সব চিকিৎসা দেশেই নেবার সুযোগ রয়েছে। তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের উদ্যোগে সিলেটে স্টেমসেল থেরাপি এবং ট্রান্সআর্টারিয়াল কেমোএম্বোলাইজেশন শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জালালাবাদ লিভার ট্রাস্ট সিলেট অঞ্চলে লিভার রোগ বিষয়ক নানা ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি নানা ধরণের কল্যাণমূখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। সাম্প্রতিক বন্যার সময় সিলেট সদর, ফেঞ্চুগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা এবং সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সহযোগীতায় একাধিক হেলথ ক্যাম্প আয়োজন ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়। এছাড়াও সে সময় সিলেট সদরের বিভিন্ন জায়গায় বন্যাপীড়িত মানুষের মধ্যে উপহার হিসেবে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছিল। পাশাপাশি ট্রাস্টের উদ্যোগে জাতীয় ইমাম সমিতির সিলেট মহানগর শাখা, সিলেট মহানগর কমিউনিটি পুলিশ কার্যনির্বাহী কমিটি, সিলেট স্টেশন ক্লাব, সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাট্রিজ, সিলেট জেলা প্রেস ক্লাব, সিলেট প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যৌথভাবে নিয়মিতভাবে লিভার রোগ বিষয়ক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে।