December 24, 2024, 12:44 pm

শখের বসে গরু পালন করে সফল চান্দিনার বসন্তপুরের খামারি কামাল।

আলিফ মাহমুদ কায়সার কুমিল্লা প্রতিনিধি ঃ
  • Update Time : Tuesday, July 14, 2020,
  • 877 Time View

সামনে ঈদুল আযহা। গরুগুলো বিক্রি করতে হবে ঈদের আগেই। তবেই না লাভের টাকা আসবে ঘরে। তাই শেষ সময়ে শ্রমিকদের ওপর নির্ভর না হয়ে পরিবারের সকলেই মিলে ব্যস্ত গরুর সেবা ও মোটা-তাজাকরণে। সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে একটি খামার গড়ে উঠেছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার একেবারেই নিভৃতপল্লী বসন্তপুর মৌজাধীন ভোলারচর গ্রামে। মৃত মনু মিয়ার ছেলে গল্লাই ইউনিয়নের বাসিন্দা কামাল হোসেনের গাজী বাড়িতে এই খামার। নাম দিয়েছেন বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্ম।

এ খামারে এক একটি গরুর ওজন হবে প্রায় ৫ মণ থেকে শুরু করে ৮ মণ পর্যন্ত। এই খামারে ১০টি ষাঁড় গরু রয়েছে। এ খামারের ভেতর ঢুকতেই ষাঁড়ের যে হাকডাক, তা হঠাৎ শুনলে ভয় পেতেই হবে। তবে দুবাই প্রবাসী খামারের স্বত্তাধীকারি জামাল হোসেনের ভাই কামাল হোসেন সামনে গেলে একেবারেই চুপচাপ হয়ে যায় গরুগুলো।খামারে গরুগুলো লালন পালন করতে শ্রমিকদের পাশাপাশি নিজেদেরও পরিচর্যা করতে হয়।

খামার মালিক কামাল হোসেন বলেন, ৩ বছর আগে স্থানীয় হাট থেকে ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের ১০টি গরু ক্রয় করি।১০ বছর ধরে নিজের মতো করে খামার গড়ে তুলেছি।দেশীয় ব্যবস্থায় গরুগুলোকে লালন-পালন প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, গরুগুলোকে কাচা ঘাস খাওয়ানোর জন্য নিজস্ব ৫ বিঘা জমিতে ঘাস রোপণ করেছি।এ ঘাসের পাশাপাশি প্রতিদিন কলা, ছোলা, খড়, ভুট্টা, আলু, মিষ্টি আলু, ভুষি ও খুদ দিনে ৫ থেকে ৬ বার খাওয়ানো হয়। গরুগুলো বিশাল আকৃতির হওয়ায় তাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ২ থেকে ৩ বার গোসল করানো হয়।

এছাড়াও গরুগুলো সারাক্ষণ বাতাসের মধ্যে রাখার জন্য পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা আছে।

বিক্রির ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে গরুর মালিক কামাল বলেন, প্রতি বছর ভালো লাভেই বাড়ি থেকে গরু বিক্রি হয়ে যায়। এই বছর করোনার প্রভাবে সারাদেশ নিস্তব্ধ। কারণ প্রতি ঈদের আগেই ক্রেতারা বাড়িতে চলে আসে।এবার তার কোন সাড়া পাচ্ছি না। আমার প্রায় অর্ধ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন,আমিসহ পরিবারের ৩ জন সদস্য খামারে কাজ করে।এবার আশা করেছিলাম সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা বিক্রি হবে। তা এখন শুভঙ্করের ফাঁকি! এবার লোকসান গুণতে হবে। ক্রেতার কোন সাড়া নেই।

কামাল হোসেনের খামারের বিশেষত্ব নিয়ে খামারে নিয়মিত আসা তাদের আত্মীয় রুহুলআমীন জানান,বাহুমা নামে দুইটি বিশাল আকৃতির
হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই গরুর ওজন প্রায় ১৫ মণের মতো হবে।কামাল হোসেনের মা শখ করে এই গরুর নাম রেখেছে রাজা বাহাদুর।
এছাড়াও শাহিওয়াল ও দেশীয় জাতের গরু রয়েছে। প্রতিদিন নিজ গ্রাম ছাড়াও আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ এই গরুগুলোকে দেখতে আসে। বিশেষ করে রাজা বাহাদুরকে।

রাজা বাহাদুরের দাম সর্ম্পকে জানতে চাইলে কামাল বলেন, গরুটির দাম ৫ লক্ষ টাকা হলে বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, করোনার প্রভাবে দাম নিয়ে খুব শঙ্কিত আছি। যদি করোনার প্রভাব ঈদের আগে একটু শিথিল না হয় এবং দেশের বাইরে বিশেষ করে ভারত থেকে গরু না আসে, হয়তোবা একটু দাম আশা করা যায়।

চিকিৎসা সেবা সর্ম্পকে জানতে চাইলে খামারের মালিক কামাল বলেন, আমি আজও পর্যন্ত উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার দেখা পাইনি।তাই স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়েই খামার পরিচালনা করছি।

এ সময় খামার পরিদর্শন কালে উপজেলা থেকে আগত এল এল পি প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রুহুলআমীন বলেন- কামালের খামারের গরুগুলো দেখতে অনেক সুন্দর ও মোটাতাজা। কোরবানী দেওয়ার জন্য উক্ত খামার থেকে গরু কেনার আহবান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নিজ ইউনিয়নে চোখে পড়ার মত, এত বড় গরু, কোরবানীর জন্য সবার নজর কারবে বলে আশা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ইউনিয়নের উদ্যোক্তা আরিফুল ইসলাম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71