December 24, 2024, 2:39 am

গলাচিপায় টুং টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে কামার পট্টি

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
  • Update Time : Monday, July 20, 2020,
  • 104 Time View

বছর ঘুরে আসে কোরবানির ঈদ। ঈদ-উল-আজহাকে ঘিরে চারদিকে আনন্দ-উৎসব ও কোরবানির পশু কেনার ধুম পড়ে। তাই মানুষ ছুটছেন কামারশালায়।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর গলাচিপায় টুং টাং শব্দে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামার শিল্পীরা।

ক্রেতা সাধারণের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে কামার পাড়ার দোকানগুলো। তাদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই।

জানা যায়, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানি ঈদের আগে কামার শিল্পীদের কাজের চাপ অনেকটা বেড়ে যায়।

সেই সাথে তাদের আয়-রোজগারও বাড়ে।
এ সময়ে কোরবানির আনুসাঙ্গিক হাতিয়ার দা, বটি, চাপাতি, ছুরিসহ ধারালো জিনিস বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
কামার শিল্পীদের বেশিরভাগই হিন্দু সম্প্রদায়ের।

তাদের অনেকেরই পৈতৃক সূত্রে পাওয়া এ পেশা। সারাবছর তেমন কাজ না থাকায় অপেক্ষায় থাকেন মুসলমানদের এ ধর্মীয় উৎসবের।
কোরবানি ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে এসব যন্ত্রপাতির বেচাকেনা তত বাড়ছে। তবে কামার শিল্পে প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লা ও লোহার দাম বাড়লেও সে তুলনায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। ফলে আর্থিকভাবে তেমন লাভবান হচ্ছেন না কামার শিল্পীরা। যার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতৃক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পৌর শহরের কর্মকার পট্টি, আমখোরা বাজার, কলাগাছিয়া বাজার, উলানিয়া বাজার, পানপট্টি বাজার, চিকনিকান্দি বাজার, ডাকুয়া বাজার, হরিদেবপুর বাসস্ট্যান্ড বাজার, বাদুরা বাজার জোলোখা বাজার সহ সকল হাটে কামার শিল্পীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। কয়লার দগদগে আগুনে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন তারা দা, ছুরি, চাকু, বটি, কুড়াল, কুদালসহ ধারালো হাতিয়ার।
কেউবা অর্ডারকৃত আর কেউবা নিজের লোহা দিয়েই তৈরি করছেন এসব ধারালো যন্ত্র। আবার অনেকে কামারের দোকানে শান দিতে নিয়ে আসছেন পুরনো হাতিয়ার।
ঈদের আরো কয়েকদিন বাকি থাকলেও ইতিমধ্যে বেশ জমে উঠেছে কামারের দোকানগুলো। তাকে তাকে সাজানো হয়েছে দা, বটি, ছুরিসহ তাদের উৎপাদিত পণ্য। বড় ছুরি তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকা, বটি দেড়শ’ থেকে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সাইজের দা, ছুরি লোহার ওজনের উপর ভিত্তি করেও বিক্রি করা হচ্ছে। কর্মকার পট্টির খোকা কর্মকার (৫৫), মনোরঞ্জন কর্মকার (৬৫), মিঠুন কর্মকার (৩৫) বলেন, বছরের বেশিরভাগ সময় কাজ না থাকায় অলস দিন কাটাতে হয়।

ফলে ওই সময় কোনো উপার্জন না হওয়ায় বহু কষ্টে ছেলেমেয়ে নিয়ে দিন যাপন করতে হয়। কোরবানির ঈদ এলেই হাতে কাজ বেড়ে যায়। বছরে ছয় মাস কাজ করে যে উপার্জন হয়, ঈদের সময় তার প্রায় দ্বিগুণ উপার্জন হয়। তাই ঈদ উপলক্ষে সারা বছরের ঘাটতি পোষাতে নিরলস পরিশ্রম করে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করে যাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71