তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অবশ্যই সরকারের ভুল যে কেউ ধরিয়ে দিতে পারে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এটি থাকতে হবে।
আমরা সেটিতে বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি সমালোচনা কাজ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা বা ‘যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা’ সেই মনোবৃত্তি থেকে সমালোচনা কখনো সহায়ক নয়।’
শুক্রবার (৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত সাংবাদিকদের মাঝে করোনাকালীন সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসকল কথা বলেন।
পৃথিবীর কোনো দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ছিল না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে মোকাবিলা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে কম, ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক কম। আমরা যদি সঠিক ভাবে মোকাবিলা করতে না পারতাম, মৃত্যুর হার ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে অন্তত বেশি হতো।’
উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য সবাই মিলে এই মহামারি মোকাবিলা করে দেশ ও অর্থনীতিকে রক্ষার উদাত্ত আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের শুরুতে চট্টগ্রামে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নানা সমস্যা ছিল। আমি তিনবার এসে এখানে সমন্বয় মিটিং করেছি। চট্টগ্রামের প্রশাসন ও সমস্ত মন্ত্রী এমপিরাও ছিলেন।
পরিস্থিতি দু’মাস আগে যা ছিল তারচেয়ে এখন অনেক ভালো হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য ইউএসটিসি’র বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করলে তিনি আমাকে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, ‘এজন্য প্রথমে আমরা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত অর্থ থেকে আরো ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মোট ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় আলোচনায় কারা সহায়তা পাবেন তারা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন গুলোই তালিকা করেছেন। যারা ইউনিয়নের বাইরে আছেন তাদের জন্য ডিসির সুপারিশ নিয়ে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে।
প্রথম দফায় ১ হাজার ৫’শ সাংবাদিকদের এই সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে ২৫০জন সাংবাদিক পাচ্ছেন। এবারে যারা বাদ যাবে অসহায় দুঃস্থ তারা পরবর্তীতে পাবে।’
তথ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা না করার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা হয়েছে। তথ্যসচিব দুই মামলাতেই আসামী। প্রথম মামলা করা হলো তথ্য মন্ত্রণালয় এটা করার অধিকার রাখেনা। পরবর্তীতে করা হলো পূর্বের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এটা অগ্রবর্তী করা যাবেনা।
এটা ঘোষণা করাই একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। পত্রিকার সম্পাদক-মালিক পক্ষ নবম ওয়েজ বোর্ডের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেভাবে এগিয়ে আসার প্রয়োজন ছিল সেভাবে আসেনি, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
চাকুরিজীবীকে শুধু চাকুরিজীবী নয় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বিভিন্ন মিডিয়ার মালিক পক্ষকে প্রথম থেকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিলাম যাতে কোন সাংবাদিককে চাকুরিচ্যুত করা নাহয় এবং পাওনা যাতে পরিশোধ করা হয়।
তা সত্ত্বেও যেখানে প্রধানমন্ত্রী মানবিকতার উদাহরণ দিয়েছেন সেখানে অনেক জায়গা থেকে অনেকে মানবিকতা দেখাতে পারেননি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।