January 5, 2025, 10:49 pm

অপকর্মের জন্য আরিফকে ডিভোর্স দেন সাবরীনা

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Friday, July 17, 2020,
  • 102 Time View

করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার (জেকেজি হেলথ কেয়ার) চেয়ারম্যান ডা. সাবরীনা আরিফকে ফের দুদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উর রহমান এ আদেশ দেন। এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় সাবরীনাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কড়া নিরাপত্তায় হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে আদালতের গারদখানায় রাখা যায়। দুপুর ১টা ৩৪ মিনিটে গারদখানা থেকে তাঁকে আদালতে তোলা হয়।

বিচারক এজলাসে বসলে ডা. সাবরীনার আইনজীবীরা বিচারকের উদ্দেশে বলেন, মাননীয় আদালত এর আগের দিনও আমরা রিমান্ড ফরওয়ার্ড (আবেদন) দেখতে পারিনি। আজও পারছি না।

আইনজীবীরা আরও বলেন, আসামির বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা আমরা জানতে পারি না। রাষ্ট্রপক্ষ পেলেও আমরা কাগজ পাই না। তিনিও বাংলাদেশের নাগরিক, আমরাও (আসামি) বাংলাদেশের নাগরিক। আসামিও তো বাংলাদেশের নাগরিক এবং তিনি একজন বিসিএস ক্যাডার। আমরা কাগজ দেখার অধিকার পাব না কেন?

এরপর বিচারক আইনজীবীদের কাগজ দেখানোর নির্দেশ দেন। আইনজীবীরা কাগজ দেখার পরে বিচারক শুনানির নির্দেশ দেন।

শুনানির প্রথমে সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. ফরিদ মিয়া বলেন, ‘ওভাল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ার। তিনি (সাবরীনা) তার চেয়ারম্যান। জেকেজি হেলথ কেয়ারের বিরুদ্ধে যে মামলা হয় সেই মামলায় সাবরীনা আসামি। করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে আসামিরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করেছেন। তাঁর স্বামী আরিফুল চৌধুরী জেকেজির মালিক। প্রতিষ্ঠান থেকে জাল সনদ দিয়ে তারা বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। আসামির রিমান্ড প্রয়োজন।’

জিআরও’র সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী আইনজীবী (এপিপি) হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) বলেন, ‘আসামি একজন ডাক্তার। তার কাজ ছিল মানুষের সেবা করা। তিনি সেটি না করে মানুষের জীবন বিপন্ন করেছেন। তার কারণে মানুষ ডাক্তারদের ঘৃণার চোখে দেখে। তার আচরণ খুনির মতো। সাবরীনা এবং সাহেদ একই সূত্রে গাঁথা। তাদের কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষ বিব্রত।’

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী সাইফুজ্জামান (তুহিন) শুনানিতে বলেন, ‘আসামি একজন ডাক্তার ও বিসিএস ক্যাডার। আসামিকে এর আগে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। কোনো তথ্য উদঘাটন হয়নি। তিনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। স্বামী বা অন্যরা জড়িত থাকলে সেটা তো তার অপরাধ না। আর অপকর্মের জন্য আরিফকে ডিভোর্স দেন সাবরীনা।’

সাবরীনার আইনজীবী আরও বলেন, ‘আসামি জেকেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান নন। কেউ যদি বলে আমি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। তাহলে তিনি কি সেই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হয়ে যাবেন। আসামি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার। মিডিয়া ট্রায়াল ইজ ডেঞ্জারাস। তদন্ত সংস্থা আসামিকে এর আগে রিমান্ডে নিয়ে প্রমাণ করতে পারেনি যে, তিনি জেকেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান। এখন আবার কেন রিমান্ড? তার জামিন প্রার্থনা করছি।’

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ডা. সাবরীনার দুইদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার ডা. সাবরীনার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর পরদিন বুধবার ডা. সাবরীনার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ২৩ জুন জেকেজির বিরুদ্ধে ‘করোনার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করে ইচ্ছেমতো রিপোর্ট দেওয়ার’ অভিযোগে তেজগাঁও থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের সময় প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর পর থেকেই সরকারি চিকিৎসক হয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদে থাকা সাবরীনার নাম এবং জালিয়াতির তথ্য নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এ সময় একটি ল্যাপটপে ১৫ হাজার ভুয়া রিপোর্ট তৈরির আলামত পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়।

জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা জব্দ করা ল্যাপটপে পাওয়া গেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71