বাংলাদেশের ব্যাংকের নির্দেশনা সত্ত্বেও প্রচলিত টাকার নোটের বান্ডিলে স্ট্যাপলার পিন লাগানোর ফলে দ্রুত অনেক নোট নষ্ট এবং অপ্রচলনযোগ্য হয়ে পড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজে এই পিন ব্যবহার করছেনা এবং ব্যাংকগুলোকেও স্ট্যাপলিং করতে বারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাংকারদের নিয়ম মানার পাশাপাশি গ্রাহকদেরও সচেতন হবার কথা বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এক হাজার টাকা ছাড়া আর অন্য কোন নোটে স্ট্যাপলিং বা পিন মারা যাবে না। তবে অনেক ব্যাংক এ নিয়ম মানলেও এখনো তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায় নি। মাঠ পর্যায়ে ১ হাজার টাকার নোট ছাড়াও অন্য নোটেও স্ট্যাপল করা হয়। ফলে অনেকক্ষেত্রেই পিনের কারণে টাকা দ্রুত নষ্ট বা অপ্রচলনযোগ্য হয়ে পড়ে।
যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই এখন নতুন নোট বা বাজারে রি-ইস্যু করা যায় এমন কোন টাকার প্যাকেট বা বান্ডিলে পিন ব্যবহার করছে না। শুধুমাত্র যেসব নোট পুড়িয়ে ফেলতে হবে বা ফেলে দিতে হবে সেগুলোতেই পিন ব্যবহার হয় বলে দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলামের।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে টাকার উপর লাল, নীল ও কালোসহ বিভিন্ন কালিতে লিখনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পেছনে ব্যাংকারদের ভূমিকাই মুখ্য। এছাড়া সকল মূল্যমানের পুন:প্রচলনযোগ্য নোট ময়লা ও অচল হয়ে যাচ্ছে এবং স্ট্যাপলিংয়ের কারণে নোটের স্থায়িত্বও কমে যাচ্ছে। ফলে নোট ছাপাতে প্রতিবছর সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থও খরচ করতে হচ্ছে। ব্যাংকগুলো যথাযথভাবে এই নির্দেশনা মেনে চললে এবং গ্রাহক সচেতনতা বাড়ানো গেলে টাকার স্থায়িত্ব বাড়ানোর সুযোগ আছে বলে মত ব্যাংকারদের।
ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনউদ্দীন বলছেন, গ্রাহকরা ১০০ টাকার কোন ব্যান্ডেল নিলেও গুনে নিতে চান। যদি পিন মারা না থাকে অন্য কোনভাবে আটকানো থাকে তাহলে তাদের সেটি গুনতে অসুবিধা হয় বলে গ্রাহকরা দাবি করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলছেন, এ ব্যাপারে জনগণের সচেতনতার বিকল্প নেই। তবে আগের চেয়ে এই প্রবণতা অনেকটা কমে গেছে।
বাংলাদেশের বাজারে এমন অনেক নোট আছে যার ওপর বিভিন্ন রংয়ের স্বাক্ষর বা টাকার পরিমাণ লেখা দেখা যায়। ফলে দ্রুত ময়লা হয়ে যায় নতুন টাকা।