চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ বিধান পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের হজে দেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে অংশগ্রহণের সংখ্যা নির্ধারণ করে দিয়েছে সৌদি আরব। আগামীকাল চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজধানীর আশকোনার হজক্যাম্পে ‘হজ কার্যক্রম-২০২২’ এর উদ্বোধন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। তবে হজে যাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখতে হয়। তারমধ্যে অন্যতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। হজের সময় যেসব জিনিসপত্র সঙ্গে নিবেন তা নিম্নে দেওয়া হলো-
যেসব জিনিসপত্র সঙ্গে নিবেন
১. আপনার হজের গন্তব্যানুসারে যাত্রার প্রস্তুতি নিন।
২. বেশি মালামাল নিয়ে আপনার বোঝা ভারী করবেন না, আবার কম নিয়ে অপ্রস্তুতও হবেন না।
৩. পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সে জন্য আপনার পাসপোর্টের ফটোকপি নোটারি করে নিন এবং বিমানের টিকেট ও মেডিকেল সার্টিফিকেটের ফটোকপি করে নিন। বাসায়ও এর কপি রেখে যান।
৪. অতিরিক্ত ১০ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও ১০ কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গিন ছবি সঙ্গে নিন।
৫. মজবুত চাকাওয়ালা মাঝারি বা বড় আকারের ১টি ব্যাগ/লাগেজ সঙ্গে নিন।
৬. মুল্যবান জিনিসপত্র (টাকা, টিকেট, পাসপোর্ট ইত্যাদি) রাখার জন্য ১টি কোমর/কাঁধ/সৈনিক ব্যাগ নিন।
৭. সালাতের মুসাল্লা বা কাপড়, কাপড় শুকানো দড়ি ও ব্যাগ বাঁধার জন্য কিছু ছোট দড়ি রাখতে পারেন।
৮. পড়ার জন্য ছোট আকারের কুরআন শরীফ, বইপত্র ও লোকেশন ম্যাপ সঙ্গে রাখুন।
৯. যোগাযোগের জন্য সাধারণ মোবাইল অথবা এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন সঙ্গে থাকলে ভালো হয়।
১০. দুই জোড়া করে চশমা ও কোমল স্লিপার সেন্ডেল এবং এগুলো রাখার জন্য ছোট পাতলা কাপড়ের একটি ব্যাগ।
১১. রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছোট সাদা বা বিশেষ রঙের ছাতা অথবা ক্যাপ রাখতে পারেন।
১২. পশু যবেহ (হাদী) বা ফিদিয়ার জন্য ৫০০-৬০০ সৌদি রিয়াল আলাদা করে রাখতে ভুলবেন না।
১৩. ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিসপত্র যেমন- ব্রাশ, পেস্ট, টয়লেট পেপার, আয়না, চিরুনি, তেল, সাবান, তোয়ালে, শ্যাম্পু, নোটবুক, পারফিউম, ভ্যাসলিন, লোশন ও ডিটারজেন্ট ইত্যাদি সঙ্গে নিন। তবে ইহরাম অবস্থায় ব্যবহার করার জন্য সেসব প্রসাধনী সুগন্ধহীন হতে হবে।
১৪. দুইটি ছোট বেডশিট ও একটি ফোলানো বালিশ, হালকা চাদর, পেষ্ট, গ্লাস, চামচ, টর্চ লাইট, বাথরুম সুগন্ধি, মুখোশ, রুমাল ও কাপড় হ্যাঙার প্রয়োজন মনে করলে সঙ্গে নিন।
১৫. দেশের পতাকা, এলার্ম ঘড়ি/হাত ঘড়ি, রোদ চশমা, মার্কার পেন রাখতে পারেন।
১৬. পর্যাপ্ত ওষুধপত্র, কিছু দরকারি এন্টিবায়োটিক, ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুসারে ভ্রমণের জন্য দরকারি কিছু ওষুধ সঙ্গে নিতে পারেন।
১৭. ব্যাগের নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে ছোট আকারের তালা-চাবি নিন এবং কিছু পলিথিন ব্যাগও নিন।
১৮. দরকারি জিনিসপত্র (টাকা, টিকেট, পাসপোর্ট, হজের পরিচয়পত্র, ক্রেডিট কার্ড) সবসময় হাতের কাছে অথবা নিরাপদ স্থানে রাখুন।
১৯. সঙ্গে কিছু বাংলাদেশি টাকাও রাখুন।
২০. একটি সাধারণ পরামর্শ হলো: আপনার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ পরিচয়পত্র নম্বর, যোগাযোগের মোবাইল অথবা ফোন নম্বর, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ও নং, হোটেলের নাম ও ঠিকানা, যে কোনো নিকট আত্মীয়ের নাম ও ঠিকানা ও মুয়াল্লিম নং আপনার সকল ব্যাগে ইংরেজিতে লিখে রাখবেন।
২১. কিছু শুকনো খাবার যেমন-চিড়া, গুড়, বিস্কুট, বাদাম, ড্রাই কেক, ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন।
২২. হজে যাওয়ার সময় আপনার মালামালের একটি তালিকা করুন ও তালিকা চেক করুন।
২৩. হজে যাওয়ার সময় আপনার বড় লাগেজের আদর্শ ওজন হবে ৮ থেকে ১০ কেজি।
পুরুষদের জন্য
১. ইহরামের জন্য দুই সেট সাদা কাপড়।
২. ইহরামের কাপড় বাধার জন্য কোমর বেল্ট।
৩. মাথা মুড়ানোর জন্য ১/২টি রেজার অথবা ব্লেড। তবে তা কোনোক্রমেই হাতের ব্যাগে রাখবেন না।
৪. উপযুক্ত ও আরামদায়ক প্যান্ট, শার্ট, ট্রাউজার, লুঙ্গি, টি-শার্ট, আন্ডারওয়্যার, পাঞ্জাবি, স্যান্ডেল, মোজা, জুতা, টুপি ইত্যাদি।
নারীদের জন্য
১. পরিষ্কার ও আরামদায়ক সালওয়ার-কামিজ, স্কার্ফ, হিজাব।
২. পুরো যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত কাপড়।
৩. লেডিস ন্যাপকিন, সেফটি পিন, কেঁচি, টিস্যু, স্যান্ডেল, মোজা ও জুতা ইত্যাদি।
এবার বাংলাদেশ থেকে হজপালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাবেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন হজে যেতে পারবেন।