দীর্ঘ ৩৬ বছর পর তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলো লে আল্বিসেলেস্তেরা। আর্জেন্টিনার ফাইনালে উঠা ও বিশ্বকাপ জেতার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের। যার সুবাদেই তিনি গোল্ডেন গ্লাভস জিতে নিয়েছেন।
কিন্তু আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের রাত পার হওয়ার আগেই নিজেকে বিতর্কে জড়ালেন মার্টিনেজ।
টাইব্রেকারে পেনাল্টি রুখে ফ্রান্সকে আটকে দেওয়া আর্জেন্টাইন এই গোলরক্ষক গোল্ডেন গ্লাভস পাওয়ার পর তা গোপানাঙ্গে ঠেকিয়া অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন। তার এমন আচরণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
যদিও এসব বিতর্ক নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাচ্ছেন না মার্টিনেজ। জয়ের আনন্দ উদযাপন করছেন তিনি। মার্টিনেজ বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছি আমি। এই জয় পরিবারকে উৎসর্গ করতে চাই। পেনাল্টি শুটআউটে শান্ত থাকাই আমার স্ট্র্যাটেজি ছিল। জানতাম, শান্ত থাকতে পারলে সেভ করে পারবো।
এ দিকে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দোহার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ২২তম আসরের ফাইনাল ম্যাচে শুরু থেকে আধিপত্ত বিস্তার করে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচের ২২তম মিনিটে ডি মারিয়াকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন ফ্রান্সের উসমান ডেম্বেলে। যার কারণে পেনাল্টি কিক থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। এরপর ৩৭তম মিনিটে ডি মারিয়ার গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আলবিসেলেস্তেরা।
বিরতি থেকে ফিরেও আর্জেন্টিনা আক্রমণে নিজেদের আধিপত্ত ধরে রেখেছিল। কিন্তু ম্যাচের ৭৮ মিনিটে আর্জেন্টিনার ডি-বক্সের ভেতর কলো মুয়ানি বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর ফাউল করে বসেন নিলোলাস ওতামেন্দি। তাই রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ৮০তম মিনিটে স্পট কিক থেকে বিশ্বকাপে নিজের ৬ষ্ঠ গোল করে দলকে প্রথম স্কোর এনে দেন এমবাপ্পে।
এরপর যেন নিজেদের ফিরে যায় ফ্রান্স। যার কারণে এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও গোল করেন এমবাপ্পে। ৮১ মিনিটে দুর্দান্ত ভলিতে গোল করে দলকে ২-২ এ সমতায় ফেরান এই পিএসজি তারকা। এরপর নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল করতে পারেনি দুই দল। ফলে ফাইনাল ম্যাচও গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুই দলই নিজেদের চেষ্টা চালিয়ে যায় গোল করার জন্য। তবে প্রথমার্ধের ১৫ মিনিটে কোনো গোল হয়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ১০৮তম মিনিটে দারুন এক গোল করে আর্জেন্টিনাকে আবারও এগিয়ে নেন মেসি। কিন্তু সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ১১৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিজের হ্যাট্টিক পূরণ করেন এমবাপ্পে। ফলে আর্জেন্টিনার জয় থামিয়ে ম্যাচ নিয়ে যান টাইব্রেকারে।
কিন্তু ম্যাচে বার বার পিছিয়ে পড়েও সমতায় ফেরা ফ্রান্সের সেখানে আর শেষ রক্ষা হলো না। পেনাল্টি শুটআউটে ক্যোমানের শট আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্তিনেজ ঠেকিয়ে দেওয়ার পর চুয়ামেনি মারেন গোলবারের বাইরে দিয়ে।
অন্যদিকে চারটি স্পট কিক থেকে চারটিতেই গোল করেন আর্জেন্টাইনরা। ফলে ৪-২ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নের তকমা আর্জেন্টিনার কাছে তুলে দিতে হল দিদিয়ের দেশমের দলকে।