মিষ্টি। আপনার হয়তো ভীষণ প্রিয়। কিন্তু কারখানায় তৈরির অবস্থা দেখে প্রিয় থাকবে তো? রাজধানী ও তার আশপাশে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রং এবং সোডা মিশিয়ে বানানো হচ্ছে মিষ্টি। আর সবার পছন্দের নুডলস ও চিপস তৈরির দৃশ্য, চমকে দেবে যে কাউকে।
মিষ্টি। স্বাদে অনন্য। কাঁচের ঘরে সাজিয়ে রাখা রংবেরংয়ের মিষ্টি, খেতে ইচ্ছে করবে যে কারো। কোনাপাড়ায় একটি দোকানের ফিটফাট অবস্থা দেখে অনেকেই আকৃষ্ট হন। কিন্ত ভেতরটা পাক্কা সদরঘাট। স্যাঁত-স্যাঁতে পরিবেশে ঘর্মাক্ত খোলা হাতে কারিগর বানাচ্ছে মিষ্টি। পাশেই নোংরা আবর্জনায় ভরপুর।
চমক আছে কামরাঙ্গীর চরের আরেক মিষ্টির কারখানায়। দেখতে খুব সুন্দর ফিটফাট। কারিগররা মিষ্টি ভাঁজছেন। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে মিষ্টিগুলোই বানানো হয়েছে পাউডার দুধের সঙ্গে সোডা মিশিয়ে। একটু খুঁজতেই বেরিয়ে এলো, বস্তাভর্তি নিম্নমানের গুড়ো দুধ, সোডা ও রং। এসব দিয়েই তৈরি স্বাদের, শখের মিষ্টি।
পাশের আরেক কারখানায় তো যাচ্ছে তাই অবস্থা। কিন্তু মালিক বেশ মাস্তান গোছের। স্যাঁতস্যাঁতে, অন্ধকার ঘরে তৈরি করছে মিষ্টি। আছে পোকামাকড়ও। এসব নিয়ে কারখানা মালিককে প্রশ্ন করতেই তিনি বেশ চটে যান তিনি।
এবার গন্তব্য চিপসের কারখানায়। মাতুয়াইলের গ্যাস রোডে কারখানার বাইরে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে কাজ চলছে। অনেক চেষ্টার পর ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে অস্বাস্থ্যকর ছবি।
আটার সঙ্গে রং সোড়া ও হাইড্রোস মিশিয়ে চিপসের কাঁচামাল তৈরি করছে কর্মীরা। পরে তা মেশিনে দিলে বের হচ্ছে, চিপস। সেই ভেজা চিপস মেশিন থেকে গিয়ে পড়ছে মেঝেতে। এসবই আবার পাশের রুমে ধুলোবালিতে ঠাসা মেঝেতে শুকাচ্ছে। আছে পা এর ব্যবহারও।
একই নোংরামিতে কামরাঙ্গীরচরে বানানো হচ্ছে নুডলস। শুকানো থেকে প্যাকেটজাত সবক্ষেত্রেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো হচ্ছে জনপ্রিয় নুডলস।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইউম সরকার জানান, মানব শরীরের জন্য উপযোগী না এমন কেমিক্যাল ব্যবহার হলে শরীরে যে কোন ধরণের রোগ সৃষ্টি হতে পারে। অচিরেই এই অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এসব ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বিশেষজ্ঞদের।