মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র নয় এ যেনো ডেথ সেল। মরণ ফাঁদ। মাদকে আসক্তদের নিরাময়ের শর্তে লাইসেন্স নিয়ে মালিবাগের হলি লাইফ মাদকাসক্ত কেন্দ্রটি আসলে একটি টর্চার সেল? একটি মৃত্যুর ঘটনা রেশ ধরে নিউজটোয়েন্টিফোরের তদন্তে বের হলো নির্যাতন, রোগীর অর্থ আত্মসাত, প্রতারণাসহ সর্বোপরি মেরে ফেলার অভিযোগ- এমনও চরম অপরাধ চলে মালিবাগের হলি লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে।
চলতি মাসের দুই তারিখ রাজধানীর মালিবাগের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র হলি লাইফের বাথরুম থেকে ইয়াসিন মিয়া নামে একটি ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ করে ছেলেটির পরিবার। এরপরই আলোচনায় উঠে আসে এই মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রটি।
ছদ্দ নাম রানা। চিকিৎসার নামে হলি লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের ভেতর তার ওপর চালানো নির্যাতনের অসহনীয় বর্নণা দেন তিনি। সরকারি চাকুরিও হারিয়েছেন এই নিরাময় কেন্দ্রের খপ্পরে পড়ে। প্রায় দুই বছর পরিবারের সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি তাকে। পাশাপাশি গুণতে হয়েছে সাত লাখ টাকারও বেশি অর্থ।
রুবায়েতেরেও প্রায় একই অবস্থা। মদ্যপানের আসক্তি মেটাতে ভর্তি হন এই হলি লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে। এরপর ভেতরেই কাটিয়েছেন সাড়ে তিন বছর। এসময় হাত-পা বেধে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।
একই ধরণের নির্যাতনের বর্ণনা দেন আরো বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী। অভিভাবকদের ভুলিয়ে ফুসলিয়ে দীর্ঘদিন এখানে রোগীদের আটকে রাখার অভিযোগও তাদের।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় সময় এই ভবন থেকে মানুষের আর্তনাদ শুনেন তারা। টর্চার সেল নয় লোহা দিয়ে খাঁচা নির্মাণ করা হয়েছে মাদকাসক্তদের উন্মাদনার হাত থেকে বাকিদের বাঁচাতে বলে দাবি, নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক রিয়াজ উদ্দিনের। তিনি দাবি করেন, রোগীদের জোর করেও পরিবারের কাছে ফেরত পাঠাতে পারেননা তারা।
এ বিষয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেগুলো যাচাই করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাইন্ড এইডে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম কিংবা হলি লাইফে ইয়াসিনের মত আর কতজন প্রাণ হারালে, মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোর অনিয়ম বন্ধে শক্ত অবস্থানে প্রশাসন যাবে, এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।