December 23, 2024, 8:00 pm

মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছা পূরণ হলো না খাজা নাজিম উদ্দিনের

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, June 2, 2020,
  • 159 Time View

অনলাইন ডেস্ক

মৃত্যুর আগে স্ত্রীর হাত ধরতে চেয়েছিলেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে করোনা উপসর্গ বহনকারী খাজা নাজিম উদ্দিন তালুকদার (৬৫)। কিন্তু তার শেষ ইচ্ছা পূরণ হয়নি। মৃত্যুকালে কাছে পায়নি প্রিয়তমা স্ত্রী ও কলিজার ধন দুই সন্তানকে। নিজের সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে তৈরি করা আধা পাকা ঘরে স্থান হয়নি তার।

করোনা নামক প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত সন্দেহে একটি দো-চালা ঘরে অনেকটা অনাদরে সোমবার ভোরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হলো তাকে। স্বামীর মৃত্যুর আগের শেষ ইচ্ছার কথা বিলাপ করে বার বার দাফন করতে যাওয়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে বলছিলেন তার স্ত্রী। প্রশাসনের সহায়তায় সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বিলচাপড়া সামাজিক কবরস্থানে ওই ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়।

গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার জানান, ঢাকার শ্যামলী পিসি কালচার হাউজিং এলাকায় নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করত খাজা নাজিম উদ্দিন তালুকদার। তার দুই ছেলেও ঢাকাতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরি করেন। ৮/১০ দিন আগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় তার। বিষয়টি তার স্ত্রী ও সন্তানদের জানায়।

চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে নিজ থেকেই ওষুধ কিনে খায়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার রাত ১১টার দিকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে বাড়ি চলে আসে। রাতে সামান্য খাবার খায়। অন্য একটি ঘরে একাই ঘুমাতে দেওয়া হয় তাকে। রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের ডাকাডাকিও করলেও করোনার ভয়ে কাছে যায়নি কেউ। ভোর রাতের দিকে সে মারা যায়।

এদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কিছু মানুষ গ্রামের সামাজিক কবরস্থানে তার দাফনের বিরোধীতা করে। স্থানীয় ইমাম লাশ দাফন না করে লাশ বহনের খাটিয়ায় তালা লাগিয়ে চলে যায়। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরীন পারভীনকে জানানো হয়। সকাল ৯টার দিকে মৃত খাজা নাজিম উদ্দিন তালুকদারের বাড়ি পৌঁছান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসলাম হোসাইন, থানা অফিসার ইনচার্জ মো. রাশিদুল ইসলাম, ইসলামী ফাউন্ডেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। তাদের হস্তক্ষেপে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্রামের সামাজিক কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইসলামী ফাউন্ডেশনের আলেমদের সহায়তায় লাশ দাফন করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মহীউদ্দিন বলেন, মৃত্যুর তিন ঘণ্টা পর এমনিতেই করোনা থাকে না। তারপরও নাজিম উদ্দিনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাসরীন পারভীন বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিকে সামাজিক কবরস্থানে দাফনের বিষয়ে কিছুটা স্থানীয় বাধা থাকলেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা দূর হয়। পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ দাফন করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71