কানাডার ক্যালগেরির বাংলাদেশ সেন্টারে বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রবাসী জীবনে এখানে “ফ্যামিলি ডে” এর ছুটি থাকায় দিবসটিকে ঘিরে প্রচুর সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটে।
এ সময় আলবার্টা গভনমেন্টের পরিবহন মন্ত্রী রাজন শাওনিসহ ক্যালগেরির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সেন্টারে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ও শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি”- সূচনা সংগীতের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ক্যালগেরির বিভিন্ন কবি ও লেখকের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এসময় ক্যালগীরির সুধীজনের পাশাপাশি স্থানীয় কবি ও লেখকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবা নুর অনু।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ৭০ বছর আগে মাতৃভাষা বাংলাকে বাঁচাতে ঢাকার রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল বাঙালি সূর্য সন্তানেরা। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকারে জীবন উৎসর্গ করেছিল এদেশের দামাল ছেলেরা। ভাষা আন্দোলনের গৌরবের ইতিহাসের পথ ধরে আজ সারা বিশ্বে পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ঐদিন বাংলাদেশের মানুষ প্রথম ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে। সেদিন একুশ না হলে হয়তো আমরা স্বাধীনতা পেতাম না।
বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সভাপতি মোহাম্মদ রশিদ রিপন বলেন, আজ বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের দিন। একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের মানুষকে শিখিয়েছে আত্মত্যাগের মন্ত্র, করেছে মহিয়ান।
তিনি আরো বলেন, প্রবাস জীবনে আমাদের নতুন প্রজন্মকে আমাদের ইতিহাস জানাতে হবে, তাদের মাঝে মাতৃভাষার চর্চা আরো বাড়াতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত বসু বলেন, আমরা চাই আমাদের কোমলমতি শিশুরা বাংলা ভাষাকে আরো জানুক, চর্চা করুক। আর সেক্ষেত্রে প্রবাসী অভিভাবকদেরও ভূমিকা নিতে হবে।
যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তাসফিন হোসেন বলেন, একমাত্র মায়ের ভাষা বাংলাতেই আমরা আমাদের অনুভূতি পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরতে পারি। যারা এই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। প্রবাসে মাতৃভাষার চর্চা অব্যাহত রাখতে আমাদের সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে।
যুগ্মসাধারণ সাধারণ সম্পাদক শুভ মজুমদার বলেন, আমরা সত্যিই গর্বিত আজকের এই দিনের জন্য। আমরাই একমাত্র জাতি যে ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। মহান শহীদ দিবস অমর হোক।
উল্লেখ্য, ছোট ছোট শিশু কিশোর ও তাদের অভিভাবক এবং সুধীজনের পদচারণায় ক্যালগেরির বাংলাদেশ সেন্টার মুহূর্তেই রূপান্তরিত হয়ে ওঠে একখণ্ড বাংলাদেশে।