রাজধানী ঢাকায় একের পর এক ঘটছে দুর্ধর্ষ সব চুরি। পেশাদার এসব চোর গাড়ি, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজেদের নজরে রেখে নামছে চুরিতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিসংখ্যান বলছে, রাজধানী ঢাকায় ৩ হাজার ৬১০ চোরের বাস। ঢাকা মহানগরের আয়তন ৩৬০ বর্গকিলোমিটার।
সে হিসাবে প্রতি বর্গকিলোমিটারে তালিকাভুক্ত চোরের সংখ্যা ১১ জনের বেশি।
এসআইভিএস নামে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে রাজধানীর ৫০ থানার চোর চক্রের একটি তথ্যব্যাংক তৈরি করেছে পুলিশ। ছবিসহ তৈরি করা ওই তালিকায় চুরির ধরন, কার বিরুদ্ধে কত মামলা, স্থায়ী-অস্থায়ী ঠিকানা, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও জামিনে নাকি কারাগারে- এসব তথ্য লিপিবদ্ধ আছে।
এদিকে আজ বুধবার থেকে ঢাকায় চার দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করছে পুলিশ। চোর-ছিনতাইকারী, ওয়ারেন্টভুক্ত ও ধর্ষণ মামলার আসামি, মাদক ও অস্ত্র কারবারিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে এ অভিযান চলবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, চুরির ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে বলা থাকে। বাসাবাড়ি খালি করে যাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে নাগরিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আগে চুরির মামলার তদন্তে আগ্রহ কম থাকলেও এখন এ ধরনের অপরাধের তদন্ত সুচারুভাবে শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় চুরি সংক্রান্ত ঘটনার তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, চোরের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি তেজগাঁও, মতিঝিল ও রমনা এলাকায়। তেজগাঁওয়ে চোর রয়েছে ৬৪৪ জন। আর রমনা ও মতিঝিলে ৫৫৭ জন করে। ওয়ারীতে ৪৮২, গুলশানে ৩৮০, মিরপুরে ৩৭৯, উত্তরায় ৩০৬ ও লালবাগে ৩০৫ জন। তাদের মধ্যে গ্রিল কাটা চোর ২০৪, তালা ও দরজা ভেঙে চুরি করছে এমন তালিকায় আছে ২৪৯ জন। গৃহপরিচারিকা ও গৃহশিক্ষক বেশে চোর রয়েছে ২৮৮ জন। প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে চুরি করছে ১৪৭ জন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য বলছে, এ বছর ঢাকায় জানুয়ারিতে চুরির মামলা হয়েছে ১৬১, ফেব্রুয়ারিতে ১৮৪ ও মার্চে ২০৬টি। সেপ্টেম্বরে মামলা হয়েছে ২ হাজার ৩৪৬টি। অনেক সময় চুরির ঘটনা ঘটলেও মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। কখনও চুরির ঘটনায় জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯-এ কল দেন ভুক্তভোগীরা। এ বছরের প্রথম আট মাসে চুরির পর হটলাইনে সাড়ে সাত হাজার ফোন গেছে।