আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সের্হিও রোমেরোর শূন্যস্থান কিছুতেই পূরণ করতে পারছিলেন না লিওনেল স্কালোনি। উইলি কাবায়েরো, নাহুয়েল গুজমান, ফ্রাঙ্কো আরমানিসহ বেশ কয়েকজনকে খেলিয়েও ভরসা পাচ্ছিলেন না স্কালোনি। অবশেষে গত বছর ডাক পরে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের। সেই থেকে এখন অবধি আর্জেন্টিনার হয়ে ১৯ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন মার্তিনেজ।
হয়ে ওঠেছেন আস্থার নাম।
১২ বছর আগে আর্জেন্টিনা দলে ডাক পেয়েছিলেন মার্তিনেজ। তবে খেলা হয়ে ওঠেনি। এরপর এক দশক পর সুযোগ হয় গোলবারের নিচে দাঁড়ানোর। সেই সুযোগটা বেশ ভালোই কাজে লাগিয়েছেন মার্তিনেজ। তার হাত ধরেই এসেছে কোপা আমেরিকা শিরোপা। কোপা আমেরিকা জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। তবে তারও বহু আগে থেকেই অ্যাস্টন ভিলা ও আর্সেনালের হয়ে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি।
ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় মার্তিনেজ। যেখানে তার স্বপ্নটা দিনে দিনে কেবল বেড়েছেই। আগে যেখানে স্বপ্ন দেখতেন আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে নামার সুযোগ পাওয়ার সেখানে আজ স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বকাপ জয়ের। নিজে যেমন স্বপ্ন দেখছেন তেমনি স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দলকেও।
সব ঠিক থাকলে আর্জেন্টিনার জার্সিতে আজ বিশ্বকাপে অভিষেক হবে মার্তিনেজের। তার খেলা ১৯ ম্যাচে মাত্র ৫ গোল হজম করেছে আর্জেন্টিনা। এতেই প্রমাণ মিলে গোলবারের নিচে কতটা সফল এই ৩০ বছর বয়সী ফুটবলার। তবে মার্তিনেজকে সবাই মনে রাখবে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারের মধ্যে দিয়ে। সে ম্যাচে তিনটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন মার্তিনেজ।
এরপর ব্রাজিলকে হারিয়ে ২৮ বছরের কোপা আমেরিকা শিরোপা আক্ষেপ ঘোচায় মার্তিনেজ। এর কিছুদিন পর ইতালিকে হারিয়ে লা ফিনালিসিমার ট্রফি জিতে আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচেও গোলবারের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন মার্তিনেজ। তাই মার্তিনেজের পারফরম্যান্স স্বপ্ন দেখাচ্ছে আর্জেন্টিনাকে।
মার্তিনেজ বলেন ‘একটা সময় আমি ভাবতাম, আর্জেন্টিনার হয়ে একটা ম্যাচ খেলতে পারলেই জীবন সার্থক হবে। এরপর যখন কোপা আমেরিকাতে খেলার সুযোগ পেলাম, আমার স্বপ্ন ছিল, সেটা জেতা। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। এখন স্বপ্ন দেখি বিশ্বকাপ জেতার, স্বপ্ন দেখি বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষক হওয়ার। ’
সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে যখন সেই স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু হবে মার্তিনেজের, কিছুটা আবেগাপ্লুত হতেও দেখা যেতে পারে তাকে, ‘বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচটা খেলতে যখন মাঠে নামব, নিজেকেই মনে মনে বলব, তুমি পেরেছ। যখন জাতীয় সংগীত বাজবে, হয়তো আমার চোখে জল চলে আসবে। এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন হতে যাচ্ছে। ’