একের পর সুযোগ তৈরি করেও কিছুতেই গোল পাচ্ছিল না ব্রাজিল। কখনো সার্বিয়ার রক্ষণভাগ, কখনো আবার দলটির গোলরক্ষক আটকে দিচ্ছিলেন নেইমার-রাফিনিয়াদের। একটা সময় পয়েন্ট খোয়ানোর শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। তবে সমস্ত শঙ্কা, দুর্ভাবনাকে ঝেড়ে ফেলে জয় দিয়েই কাতার বিশ্বকাপ শুরু করলো ব্রাজিল।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করেছে তিতের শিষ্যরা।
সার্বিয়ার জমাট রক্ষণ এবং দলটির তিন কাঠির নিচে দাঁড়ানো মিলিনকোভিচ-সাভিচ চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়ালেও, রিচার্লিসন গুড়িয়ে দেন সমস্ত প্রতিরোধ। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ৬২ মিনিটে তার গোলে স্বস্তি ফেরে ব্রাজিল শিবিরে। এরপর ৭৩ মিনিটে অ্যাক্রোবেটিক শটে (বাইসাইকেল কিক ভলিতে) সার্বিয়াকে স্তব্ধ করে দেন রিচার্লিসন।
দুটি গোলেই কমবেশি অবদান ছিল ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের। ৬২তম মিনিটে নেইমার নিজের কারিকুরি দেখিয়ে সার্বিয়ার ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে বল দেন ভিনিসিয়ুসকে। এই ফরোয়ার্ডের শট নেন গোলের উদ্দেশেই। তবে তার শট ঠেকিয়ে দেন সাভিচ। কিন্তু সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা রিচার্লিসন মুহূর্তের মধ্যে রিবাউন্ডে বল জালে পাঠান। ভাঙেন সার্বিয়ার সমস্ত প্রতিরোধ।
ডেডলক ভাঙতেই সার্বিয়াকে চেপে ধরে ব্রাজিল। শানাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। গোল হজমের পর সার্বিয়ার ফুটবলাররাও প্রায় হাল ছেড়ে দেয়। সেই সুযোগে দ্বিতীয়বারের মতো স্কোরশিটে নাম তোলেন রিচার্লিসন। তবে এই গোলের পুরো অবদানই তার। ৭৩তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ভিনিসিয়ুস বল বাড়ান তাকে। সে বল পায়ে আসতে একটু উঁচুতে তুলে বাইসাইকেল কিকে করেন রিচার্লিসন। তার সেই শট ঠেকানোর কোনো ক্ষমতাই ছিল না সাভিচের।
ব্রাজিল আরও বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতো। তবে সাভিচ দুই গোল হজমের পরও হার না মানা মানসিকতা নিয়ে গোলকিপিং করতে থাকেন। একাধিক সেভে দলকে বড় হারের হাত থেকে বাঁচান তিনি। দুর্ভাগ্য ব্রাজিলেরও। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের দুটি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। আলেক্স সান্দ্রোর পর পোস্টে বল লেগে ফিরে আসার আক্ষেপে পোড়েন কাসেমিরো।
শেষদিকে, জয়ের ব্যবধান না বাড়ার চেয়েও ব্রাজিলিয়ানদের বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে নেইমারের ইনজুরি। ৮০তম মিনিটে তিতে এই ফরোয়ার্ডকে মাঠ থেকে তুলে নেন। মাঠ ছাড়ার সময় বোঝা গেছে, নেইমার গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন। ব্রাজিলের শীর্ষ তারকা চোটে পড়ে বাকিদের চিন্তায় না ফেললে সার্বিয়ার বিপক্ষে পাওয়া জয়টি হয়তো আরও দারুণভাবে উদযাপন করতে পারতো ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা।