গত এক দশকে রাজধানী ঢাকায় শব্দদূষণের মাত্রা বেড়েছে তিন গুণের বেশি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা-ইউএনইপি বলছে, শব্দ দূষণে বর্তমানে বিশ্বে ১ নম্বরে রয়েছে তিলোত্তমা ঢাকা।
চিকিৎসকরা বলছেন, ক্রমাগত শব্দ দূষণের প্রভাবে নগরবাসী রয়েছে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, মানসিক রোগের ঝুঁকিতে। আর শব্দ দূষণকে শব্দ সন্ত্রাসের চেয়ে কম চোখে দেখছেন না পরিবেশবিদরা।
নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
ট্রাফকি পুলিশ মোহাম্মদ খলিল মিয়া রাজধানীতে কর্মরত আছেন ১০ বছরেও বেশি সময়। সারাদিন অতিমাত্রার শব্দের মধ্যে কাজ করে শারীরিক অস্বস্তিতে ভুগছেন বলে জানান তিনি।
শুধু তিনিই নন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ এর গবেষণা বলছে, শব্দদূষণের কারণে ঢাকার ৪২ শতাংশ রিকশাচালক কানের সমস্যায় ভুগছেন এবং একই সমস্যা ভুগছেন ৩১ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়া ১২ শতাংশ রাজধানীবাসী রয়েছেন শ্রবণ সমস্যায়।
শব্দ দূষণের মূল কারণ অতিমাত্রার গাড়ির হর্ন। পাশাপাশি নির্মাণ কাজ, মাইক বাজানো, জেনারেটরের শব্দ থেকে শুরু করে নানা কারণে সৃষ্টি হচ্ছে শব্দদূষণ। মানুষের শ্রবণের সহ্যসীমা সর্বোচ্চ ৭০ ডেসিবল হলেও ঢাকা শহরের গড় শব্দ তরঙ্গ ১০০ ডেসিবলের ওপরে।
গবেষকরা বলছেন, গত এক দশকে রাজধানীতে শব্দদূষণের মাত্রা বেড়েছে তিনগুণ। এর প্রভাবও পড়েছে মারাত্মকভাবে। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপির তথ্যমতে শব্দদূষণে বিশ্বের শীর্ষ স্থানে ঢাকা।
এ দূষণের কারণে হাইপার টেনশন, আলসার, হৃদরোগ, মাথাব্যথা, স্নায়ুর সমস্যাসহ শ্রবণ শক্তি হারানোর ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাক, কান ও গলা রোগ বিশেজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার।
পরিবেশবিদ আবু নাসের খান জানান, শব্দ এখন নীরব ঘাতকে রূপ নিয়েছে। এ নিয়ে বারবার কথা বলা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।